নাজমুল আলম মুন্না(সাতক্ষীরা প্রতিনিধি)
আনোয়ারা মেমোরিয়াল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাতক্ষীরায় ডাক্তারের গাফিলতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মোছাঃ সুবর্না খাতুন (১৭)। সে সদরের নলকুড়া গ্রামের পরিবহন শ্রমীক লল্টু মিয়ার মেয়ে। অসুস্থ্য সুবর্নার মা সেলিনা ও মামা মাসুম অভিযোগ করে বলেন
এ্যাপেন্ডিকস এর ব্যথা নিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮ টায় মেয়েকে ভর্তি করি আনোয়ারা ক্লিনিকে। সেখানে ঐ রাতেই প্রথমবার অপারেশন করেন আনোয়ার মেমোরিয়াল ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ মুশফিকুর রহমান। পরবর্তীতে সেই ক্লিনিকের ম্যানেজার ইকতিয়ার ও কম্পাউন্ডার খায়রুলকে দিয়ে আরও ২ বার অপারেশন করান ডাক্তার মুশফিকুর রহমান। অথচ ঐ ক্ষতস্থানে ২ বার অপারেশন করেন কোন রকম অবশ না করেই। ২য় বার অপারেশন করার আগে রোগী নিজেই ডাক্তার কোথায় জানতে চাইলে তারা তাকে হুমকি দিয়ে বলে আপনার অতো বোঝা লাগবেনা আমরাও ডাক্তারের চেয়ে কম না চুপচাপ শুয়ে থাকেন। মেয়ের মা সেলিনা আরও অভিযোগ করে বলেন যেহেতু একজন মেয়ের অপারেশন করা হলো সেখানে কোন নারী ডাক্তার বা নার্স ছিলনা কেন? এভাবে মোট তিনবার অপারেশন করার পরও সুবর্নার ক্ষত আরও বেড়ে যায় এবং ইনফেকশন দিনদিন বেড়ে যাওয়ায় মাংশ পচে গেছে। আমরা একমাসের বেশিদিন ধরে এই যন্ত্রনা ভোগ করছি। ক্ষতস্থানে বর্তমানে প্রচন্ড জ্বালাযন্ত্রণা হওয়ার ফলে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে ২৬ জানুয়ারি তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি আমরা। এই অপারেশনের জন্য আমাদের কাছ থেকে দফায় দফায় মোট ২৪ হাজার টাকা বিল করে ১৬ হাজার টাকা নিছে। আমরা তিনশত টাকা কম দিছিলাম তখন তারা আমাদের ছাড়পত্র না দিয়ে আটকে রেখে দুঃব্যবহার করে। এপর্যন্ত সুবর্নাকে ৭, ৯ ও ২৯ ডিসেম্বর তিনবার ছাড়পত্র দিয়েছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
প্রচন্ড অসুস্থ্য সুবর্না কাঁদতে কাঁদতে বলেন আমি বহুদিন যন্ত্রনায় ঘুমাতে পারছিনা এবং এই কস্ট আর সহ্য করতে পারছিনা। আমি ওদের নামে মামলা করবো। আমার এই অবস্থার জন্য দায়ি আনোয়ারা ক্লিনিকের ডাক্তার মুশফিকুর রহমান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। সাংবাদিক পরিচয়ে ক্লিনিকের ম্যানেজার ইকতিয়ারকে ফোন দিলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন আপনারা মিডিয়ার লোক না জেনে কেন বলছেন যে আমরা অপারেশন করিছি আমরা কি ডাক্তার? অপারেশন কে করেছে প্রশ্নে তিনি বলেন ডাঃ মুশফিকুর রহমান করেছেন। একটা সামান্য এ্যাপেন্ডিকস এর অপারেশন কেন ৩ বার করা লাগলো জানতে চাইলে তিনি বলেন তিনবার কেন আরও বহুবার করা লাগতে পারে। তাছাড়া সিএস ব্যবস্থা নেবে আপনারা না। তাছাড়া সে সদর হাসপাতালে কেন ভর্তি হলো প্রশ্নছুড়ে দিয়ে বলেন আমাদের এখানে যতবার আসবে আমরা ট্রিটমেন্ট দেব। আপনাদের গাফিলতি ও ভুলের কারনে আপনাদের প্রতি ভরসা না পেয়ে সে সদরে ভর্তি হয়েছে। যা খুশি করুক আমাদের কিছু করার নেই। আপনারাতো অসহায় রোগীরদের দালালের মাধ্যমে ক্লিনিকে ভর্তি করে গলা কাটেন বলতেই ওপরপ্রান্ত থেকে ফোন কেটে দেয়। অভিযুক্ত ডাক্তারের ফোন নাম্বার পাওয়ার জন্য বারবার চেস্টা করেও ওখানকার দায়িত্বপ্রাপ্তরা নাম্বার দেওয়ার অনুমতি নেই বলে জানান। সুবর্না বর্তমানে সদর হাসপাতালের ডাক্তার সুব্রত মন্ডলের নিকট চিকিৎসায় রয়েছে।
Leave a Reply