।
স্টাফ রিপোর্টার:মোঃইমরান
ঝালকাঠি জেলায় ৪৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। ৯৫ ভাগ ধানই কৃষকের গোলায় উঠেছে। ধান চাষাবাদে জেলার বেশ কিছু জায়গায় ট্রাক্টর ও কাটিং মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ধান মাড়াইয়ের পুরো কাজই হচ্ছে মেশিনে। এ ছাড়া কীটনাশক স্প্রে, ফসল ঝাড়াসহ এখন সবই হচ্ছে যন্ত্রে। বেড়েছে আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার। কৃষিকাজে এসব যান্ত্রিকীকরণের ফলে একদিকে যেমন কৃষকের অর্থ, শ্রম ও সময়ের সাশ্রয় হচ্ছে তেমনি কম পরিশ্রমে ফসলের বেশি উৎপাদনে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। এ বিষয়ে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, জেলায় ৪৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। কৃষক যাতে ধান উৎপাদনে সফলতা ও সঠিক বাজারদর পান সেজন্য কৃষি বিভাগ নানামুখী পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়ে জোরদার ভূমিকা রাখছে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষিতে বিপ্লব হচ্ছে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, সময় অপচয় রোধসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে ফসল রক্ষা পাচ্ছে। বীজতলা প্রস্তুত থেকে শুরু করে ঝাড়া ও মাড়াই সবই হচ্ছে যান্ত্রিকভাবে। সরকার যান্ত্রিকীকরণের জন্য সমতল এলাকার জন্য ৫০ শতাংশ ও হাওর এলাকার জন্য ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলায় কৃষিজমি তৈরি, বীজতলা প্রস্তুত, কীটনাশক স্প্রে, ফসল কাটা-মাড়াই-ঝাড়াসহ এখন সবই হচ্ছে যন্ত্রে। এতে বদলে যাচ্ছে আবহমান গ্রাম বাংলার কৃষির দৃশ্যপট। আদি কৃষি পরিণত হচ্ছে আধুনিক কৃষিতে। কৃষিজমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া, শুকানোসহ সবই হচ্ছে যন্ত্রের মাধ্যমে। এর মধ্য দিয়ে কৃষি প্রবেশ করেছে যান্ত্রিক যুগে। ফসল উৎপাদনের ব্যয় যেমন কমেছে তেমনি কমছে ফসল ঘরে তোলার সময়সীমাও। সঠিক সময়ে ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। এতে ফসলের ক্ষতিও কম হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে অনেকটাই রক্ষা পাচ্ছে ফসল। অপচয় হ্রাস পাওয়ায় বেশি ফসল পাচ্ছেন কৃষক। কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ায় কৃষকের লাভের পরিমাণও বাড়ছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষাবাদ, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে ধান রোপণ ও কর্তন করা যায়। এতে কৃষকের শ্রম, সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়। চারা রোপণে যন্ত্র ব্যবহার করলে রোপণ খরচ ৫০ থেকে ৭৫ ভাগ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। আবার স্বল্প সংখ্যক শ্রমিকেই হয়ে যাচ্ছে ধান কাটা ও মাড়াই। কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার দিয়ে ঘণ্টায় চার বিঘা জমির ধান কাটা যাচ্ছে। ভবানিপুর এলাকার কৃষক আরিফুল ইসলাম জানান, তিনি ছোটবেলায় মহিষ ও গরু দিয়ে হালচাষ করতে দেখেছেন। এখন আর তাদের এলাকায় গরু দিয়ে হালচাষ দেখা যায় না। হালচাষ হচ্ছে ট্রাক্টর দিয়ে। কৃষক ছানোয়ার হোসেন জানান, আগে গরু চড়ানোর জন্য জমি ৩-৪ বছর পতিত রাখা হতো। ১-২ বছরে এক ফসল হতো। এখন কৃষি বহুমুখীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে। ফলে কৃষিতে ফসলের বৈচিত্র্য আসছে। উৎপাদন বাড়ছে। যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা হলে কৃষি আরও এগিয়ে যাবে। কীটনাশক ব্যবহারের জন্য ড্রোন ব্যবহার করতে পারলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।
Leave a Reply