এস এম জহিরুল ইসলাম
ভালোবাসা মানুষের সহজাত অনুভূতি, যা আল্লাহ প্রদত্ত। ইসলাম ভালোবাসাকে প্রশ্রয় দেয়, তবে সেটি অবশ্যই শালীনতার সীমার মধ্যে থাকতে হবে। ভালোবাসার সবচেয়ে সুন্দর রূপ হলো বৈধ ও নৈতিক সম্পর্কের মাধ্যমে একে প্রকাশ করা, যা পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে এবং সামাজিক ভারসাম্য বজায় রাখে।
তবে, বর্তমান সময়ে ভালোবাসা দিবস যে রূপ ধারণ করেছে, তা ইসলামের দৃষ্টিতে কতটা গ্রহণযোগ্য, সেটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন।
ভালোবাসা দিবস এবং ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
১. অনুকরণ নিন্দনীয়
ভালোবাসা দিবসের উদ্ভব হয়েছে খ্রিস্টান ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতি থেকে, যা ইসলামী জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি কোনো জাতির অনুকরণ করবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।”
(আবু দাউদ, হাদিস: ৪০৩১)
অতএব, ইসলামে এমন কোনো উৎসব পালন করা অনুমোদিত নয়, যা ইসলামসম্মত নয় এবং মুসলিম সংস্কৃতির বাইরের কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক প্রথা অনুসরণ করে।
ইসলামে ভালোবাসার প্রকৃত রূপ হলো—পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন করা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসা বৃদ্ধির চেষ্টা করা এবং নৈতিকতার মধ্যে থেকে একে অপরের প্রতি যত্নশীল হওয়া।
উপসংহার:
ভালোবাসা একটি পবিত্র অনুভূতি, যা আল্লাহর দেওয়া এক মহা অনুগ্রহ। তবে সেটি প্রকাশের সঠিক পদ্ধতি রয়েছে। ইসলামে ভালোবাসার জন্য আলাদা কোনো নির্দিষ্ট দিন পালনের প্রয়োজন নেই, বরং প্রতিদিনই ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলতে বলা হয়েছে।
ভালোবাসা দিবস যদি অপসংস্কৃতি, অনৈতিক সম্পর্ক ও অপচয়ের দিকে ধাবিত করে, তবে তা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে যদি কেউ স্ত্রী-পরিবারের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের জন্য এ দিনটিকে শুধুমাত্র একটি উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহার করে, তাও শালীনতার মধ্যে থাকতে হবে এবং ইসলামী বিধান লঙ্ঘন করা যাবে না।
সুতরাং, একজন মুসলিমের উচিত—ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করা এবং ইসলামসম্মত উপায়ে জীবন পরিচালনা করা। ভালোবাসা হোক সারাজীবনের, শুধুমাত্র একটি দিনের নয়।
লেখক: সংবাদকর্মী এস এম জহিরুল ইসলাম
Leave a Reply