মো: আল আমিন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ঘরে ঢুকে টাকা লুট ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের ছোট ভাই সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. জিয়াউর রহমান।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন—টাঙ্গাইল কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম, উপপরিদর্শক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. জিয়াউর রহমান। অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, গত ১৮ জুন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বাহাদিপুর গ্রামে ছালেহা বেগম নামের এক নারীর বাড়িতে অভিযানে গিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ছালেহা বেগম এ বিষয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ (জিডি) করেছেন। তিনি জানান, ওই দিন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা তার বাড়িতে হানা দিয়ে কোনো মাদক না পেলেও গাড়ির তেলের খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিছু টাকা দেওয়ার পর তারা ঘরে ঢুকে তছনছ করে এবং নাটকীয়ভাবে ১০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা ছালেহা বেগমের ঘর থেকে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং ছেলের ঘর থেকে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করায় তাকে হুমকি দেওয়া হয়। অভিযানের সময় ভিডিও করে জবানবন্দি নেওয়া হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।
ছালেহা বেগম বলেন, “সহকারী উপ-পরিদর্শক শামীম আল আজাদ আমার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্যাতন চালায়। সে হাত ধরে টানাহেঁচড়া করে, লাঠি দিয়ে ভয় দেখায় এবং জোর করে টাকা নিয়ে যায়। আমি শুধু বরখাস্তে সন্তুষ্ট নই, লুট হওয়া টাকা ফেরত চাই।”
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শামীম আল আজাদকে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অনুপস্থিত থাকার দায়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, “অভিযানের নামে কোনো কর্মকর্তা অর্থ আত্মসাতে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a Reply