লালন সরকার, দেবীগঞ্জ
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হালিমের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠে আসায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক পদে থাকা এই জনপ্রতিনিধির এমন কর্মকাণ্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত আব্দুল হালিম একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী দেবীগঞ্জ উপজেলার আমির, সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, কাজী (বিবাহ রেজিস্ট্রার), খারিজা গুয়াগ্রাম হাজরাডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট এবং ফুলবাড়ি বাজার জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেবীগঞ্জের ফুলবাড়ি এলাকার রফিক হাসান ও পাশের ষোলঘর এলাকার মোছা. মিমি আক্তার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। চাকরির সুবাদে রফিক ঢাকায় থাকলেও স্ত্রী মিমি থাকতেন শ্বশুরবাড়িতে। মিমি গত বছর দাখিল পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে চেয়ারম্যান হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে।
ধীরে ধীরে চেয়ারম্যান মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রেম নিবেদনসহ বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলেন বলে অভিযোগ গৃহবধূ শিক্ষার্থী মিমির। মোবাইলে নিয়মিত এসএমএস আদান-প্রদানের বিষয়টি ধরা পড়ে মিমির স্বামীর চোখে। গৃহবধূ শিক্ষার্থী মিমির ফুলবাগানে ভ্রমর হতে চায় আরো বিভিন্ন ধরনের শতাধিক এসএমএস সহ সুযোগ বুঝে আধা ঘন্টা করে মোবাইলে কথাও বলেন চেয়ারম্যান। মিমির স্বামী ঈদের সময় বাড়িতে এসে বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ও তার পরিবারকে সতর্ক করলেও তাতে কোনো পরিবর্তন আসে না।
সম্প্রতি রফিক ঢাকা থেকে সরাসরি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যানের পাঠানো শতাধিক এসএমএস দেখতে পান। বিষয়টি জানাজানি হলে, ফুলবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম পদ থেকে হালিমকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে দেবীগঞ্জ থেকে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা আবুল বাশার বসুনিয়া ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১৫ দিনের সময় নেন।
ভুক্তভোগী মিমি বলেন, মাদরাসায় পড়ার সুবাদে স্যার আমাকে চিনতেন। একদিন পড়া দেখানোর কথা বলে বাড়িতে আসেন। কিছুদিন পর থেকে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকেন। আমি বিরক্ত হয়ে বলি ম্যাডামকে বলে দেব। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবার মেসেজ শুরু হয়। এমনকি ফুলবাগান সাজানোর কথাও বলেন। এই সম্পর্কের কারণে আমার সংসার ভাঙনের মুখে। আমি তার শাস্তি চাই এবং স্বামীর ঘরে ফিরতে চাই।
রফিক হাসান বলেন, স্ত্রী ও তার পরিবারকে সংশোধনের কথা আগেই বলেছিলাম। কিন্তু কোন পরিবর্তন আসেনি। গত সপ্তাহে হুট করে ঢাকা থেকে শ্বশুর বাড়িতে এসে স্ত্রীর ফোনটি হাতে নেই।আমার স্ত্রীর ফোনটি এখন আমার হেফাজতে। সেখানে শতশত ম্যাসেজ আছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করতে এই নাটক সাজিয়েছে একটি পক্ষ। যে মোবাইল নাম্বারের কথা বলা হচ্ছে সেটিও আমার না।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা আবুল বাশার বসুনিয়া বলেন, আমরা মেয়ের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরিবার থেকে বাধা দেওয়া হয়। তার স্বামীর সাথে আজ দেখা হওয়ার কথা ছিলো। আমি পঞ্চগড়ে অবস্থান করায় এখনো দেখা হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক:মোঃ খলিলুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন
Copyright © 2025 দৈনিক সময়বেলা. All rights reserved.