লালন সরকার, দেবীগঞ্জ
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে গোপনে ভিডিও ধারণের পর তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ আদায়ের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা রকিউজ্জামান রকিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রকিউজ্জামান রকিকে প্রধান আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় রকির বন্ধু মামুনের নাম উল্লেখসহ আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পরপরই দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ শালডাঙ্গা ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে রাতেই রকিকে গ্রেফতার করে।
গ্ৰেফতার রকিউজ্জামান রকি উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
রকি গ্রেফতারের পর বন্ধু ছাত্রলীগ কর্মী Men Tal MuNna ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস ভাইরাল।
স্ট্যাটাসে লেখেন"
একজন প্রেমিকের ‘মস্তিষ্ক ধর্ষণ’-এর গল্প
—
আমি আজ একজন মস্তিষ্ক ধর্ষণ হওয়া প্রেমিকের পক্ষ হয়ে কিছু কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। সকলকে পড়ার অনুরোধ করছি।
একটা পরিবারের মাথায় কতটা সমস্যা থাকলে, তারা ব্যক্তিগত বিষয় পারিবারিকভাবে না মিটিয়ে, বাড়াবাড়ি করে ফেলে? বলছি রকিউজ্জামান রকির (রকি) কথা। রকি যে মেয়েটার সঙ্গে সম্পর্ক করতো, তাদের সম্পর্ক ছিল দুই বছরের। মেয়েটির পরিবারের অন্তত এতটুকু বোঝা উচিত ছিল, যে একটা ছেলে ও মেয়ে দুই বছর একটি সম্পর্কে জড়িত থাকলে, তাদের ভেতরে কী হয়েছে বা কী হয়নি, তা মূলত তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।
এই বিষয়টি নিয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনায় বসে একটা সমাধানে পৌঁছানো যেত। কিন্তু তারা বরং রকিকে দোষী সাব্যস্ত করতে গিয়ে, নিজেদের মেয়েকে কতটা সস্তায় সামাজিক নিলামে তুলছে—তারা নিজেরাও হয়তো তা বোঝে না।
রকির ভুল কী ছিল? সে ওই মেয়ের সঙ্গে দুই বছর সম্পর্ক করেছিল, আর তাই তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। অথচ মেয়েটি তখন অন্য একজন, এমনকি প্রবাসী একটি ছেলের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপরও রকি তাকে বিয়ে করতে চেয়েছে। কিন্তু মেয়েটি তাতেও রাজি হয়নি।
নিরুপায় হয়ে রকি এক ফেক আইডি খুলে, মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইলের মতো কিছু করার হুমকি দেয়—যেটা নিঃসন্দেহে ভুল, কিন্তু তা ছিল একটি প্রেমিকের হতাশা ও পাগলামির বহিঃপ্রকাশ। ভালোবাসার মানুষকে পাওয়ার জন্য সে এমনটি করেছিল।
আমি বলছি না, রকির কাজটা যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু একটা কথা মনে পড়ে, "ভালোবাসার জন্য মানুষ কী না করতে চায়!"
সব চেষ্টা করেও ব্যর্থ রকি অবশেষে পড়ে যায় মেয়েটির পরিবারের করা এক অযৌক্তিক মামলার ফাঁদে। তাকে গ্রেফতার করা হয়, এবং "ধর্ষক" ও "ছাত্রলীগ" ট্যাগ লাগিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
নিউজের হেডলাইন দেখলে রকিকে খারাপ মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল সত্যটা জানা উচিত—ভেতরের কাহিনি অনেকটাই ভিন্ন।
বলছিলাম রকিউজ্জামান রকির কথা।
একজন পরাজিত প্রেমিকের গল্প।
সম্পাদক ও প্রকাশক:মোঃ খলিলুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন
Copyright © 2025 দৈনিক সময়বেলা. All rights reserved.