আশরাফুল আলম সরকার
বিশেষ প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুরে ঝুট ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় চার জন আহত হয়েছেন। এ সময় পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ২টার দিকে উপজেলার নয়নপুর (ধনুয়া) রিদিশা নিটেক্স কারখানার সামনে গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- গাজীপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল পালোয়ান (৫০), ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাকিবুল আলম বিল্লাল (৫০), সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ফকির (৪৫) এবং যুবদলের সদস্য আমিনুল ইসলাম (৩২)। তাদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সোহাগ আহম্মেদের মোটরসাইকেলসহ আহতদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে নিয়ে যান অপর পক্ষের নেতাকর্মীরা।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে বিএনপির একটি পক্ষ নয়নপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকানপাট বন্ধ করে চলে যাওয়ার জন্য বলে। ঝুট ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা হতে পারে বলে জানিয়ে যায় তারা। এর কিছুক্ষণ পর আরেক পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করতে থাকে। দুপুর সোয়া ২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে বাসায় চলে যান ব্যবসায়ীরা।
গাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আমি এবং ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক উজ্জল হাসান জয়ের নেতৃত্বে দুপুর সোয়া ২টার দিকে নয়নপুর রিদিশা নিটেক্স কারখানা এলাকায় যান বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করি। মিছিল শেষে রিদিশা নিটেক্স কারখানান সামনে বসে চা পান করেছিলেন আমাদের নেতাকর্মীরা। এ সময় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক আয়াত উল্লাহর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। আমাদের চার জন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করেন তারা। সেইসঙ্গে পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে নিয়ে যান। তবে ঝুট ব্যবসা নিয়ে সংঘর্ষের যে কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। বিএনপির একটি পক্ষ আমাদের ওপর হামলা করেছিল।’
৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আয়াত উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দলীয় লোক ভালুকা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম রিদিশা নিটেক্স কারখানায় ঝুট ব্যবসা করে আসছেন। আজকে কারখানা থেকে ঝুট বের হওয়ার কথা শুনে কামরুজ্জামান খান ও উজ্জল হাসানের নেতৃত্বে কারখানার সামনে মিছিল দিয়ে বাধা দেন। আমরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আমাদের কোনও কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে এসে মিছিল করবে, গাড়ি আটকে নেতাকর্মীদের মারধর করবে; এটা তো মানা যায় না। তারা এলাকায় এসে বিশৃঙ্খলা করলে আমরা তো মানবো না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রিদিশা নিটেক্স কারখানার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঝুট ব্যবসার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। এটি সরাসরি প্রধান অফিস থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামান বলেন, ‘রিদিশা নিটেক্স কারখানার সামনে বিএনপির দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে বিকাল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি আমরা।’
সম্পাদক ও প্রকাশক:মোঃ খলিলুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন
Copyright © 2025 দৈনিক সময়বেলা. All rights reserved.