মোঃ ইমরান(স্টাফ রিপোর্টার)
ভারতের জনপ্রিয় নায়ক সাইফ আলী খানের ওপর হামলার অভিযোগে ভারতে গ্রেপ্তার ঝালকাঠির শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদের পরিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চায়। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক কারণে দেশ ছেড়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়া সাজ্জাদ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। জানা যায়, শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ভারতে গিয়ে হোটেল বয় হিসেব চাকরি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে সেখানে বসবাস শুরু করছিলেন। তিনি মোল্লারহাট ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য। তাঁর বাবা রুহুল আমিন ওই ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্ত চেয়ে সাজ্জাদের বাবা রুহুল আমিন জানান, গত শনিবার ভারতে গ্রেপ্তারের পর সাজ্জাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে চায় ভারতীয় পুলিশ। তখন সাজ্জাদ গ্রামের বাড়িতে ফোনকল করে ভোটার আইডি কার্ড চান, তা দেওয়ার পর পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এর পর থেকে কোনো যোগাযোগ নেই। এর আগে সাজ্জাদ বাড়িতে ফোনকল করে জানান, ভারতের নায়ক সাইফ আলী খানের ওপর হামলা ঘটনায় যে ছেলের ছবি পত্রিকায় এসেছে, ওই ছেলের সঙ্গে তাঁর চেহারার মিল রয়েছে। এজন্য সাজ্জাদের হোটেল মালিক তাঁকে সাবধানে থাকতে বলেছেন। কিন্তু ওই দিন রাতেই পুলিশ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। সাজ্জাদের বাবা রুহুল আমিন আরও জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের চাপে এলাকা ছেড়ে অবৈধভাবে ভারতে চলে যান। সেখানে তিনি একটি আবাসিক হোটেলে বয় হিসেবে চাকরি নিয়ে সংসার চালাতে টাকা পাঠাতেন। হঠাৎ পরিবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারে সাজ্জাদ ভারতে সুপারস্টার সাইফ আলী খানের উপর হামলার ঘটনায় আটক হয়েছে। এতে করে তাদের আত্মীয়-স্বজন সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনা শোনার পর মা নাজমা বেগম ঘরে বসে কান্না করেই দিন পার করছেন। ছেলের মুক্তির চিন্তায় দিশেহারা বাবা রুহুল আমিন জানান, কীভাবে ছেলেকে উদ্ধার এবং আইনি প্রক্রিয়া চালাবেন সেটা নিয়ে তারা চিন্তিত। কারণ তারা ভারতের কিছুই চেনেন না। তারা মনে করছেন, সাজ্জাদ ওই ঘটনায় জড়িত না বা চেহারার মিলে সেখানে চক্রান্তের শিকার হতে পারেন। গ্রেপ্তার সাজ্জাদ নিজের এলাকায় মোটরসাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলনে। আরও দুই ভাইদের মধ্যে সাজ্জাদ মেঝো। ২০১৭ সালে নলছিটি হদুয়া মোল্লারহাট সড়কের স্টিল ব্রিজ নামক স্থানে ভাড়ায় মোটরসাইকেলের চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় শরিফুল ইসলাম শাজ্জাদ আসামি করা হয়েছিল। তবে পরে আদালতের মাধ্যমে খালাস পেয়েছেন বলে জানান সাজ্জাদের বাবা। রুহুল আমিন বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে তখন আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছিল।’ প্রতিবেশী নাজনিন আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে শাজ্জাদ ভাইকে আমি দেখে আসছি। তিনি কাজকর্ম করে সংসারের হাল ধরেছিলেন। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলা–হামলার শিকার হয়েছেন।’ নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. সালাম বলেন, ‘শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে তদন্তের জন্য আমাদের কাছে কোনো কাগজ আসেনি। আমরা নির্দেশনা পেলে তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করব প্রকৃতপক্ষে শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ এলাকায় কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না। তবে ভারতের ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে শুনেছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক:মোঃ খলিলুর রহমান নির্বাহী সম্পাদক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন
Copyright © 2025 দৈনিক সময়বেলা. All rights reserved.